কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা - কারবালার ইতিহাস আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া
কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা সম্পর্কে জানা আমাদের দুনিয়াবী জীবনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাই আজকের এই আর্টিকেলে কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আপনি এখান থেকে কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন।
তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
সূচিপত্রঃ কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা - কারবালার ইতিহাস আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া
- কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা
- শহীদে কারবালার ইতিহাস
- হাসান হোসেনের কারবালার যুদ্ধ
- কারবালার পরের ইতিহাস
- আমাদের শেষ কথা
কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা - কারবালার ইতিহাস আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর আদরের নাতি বিশ্ব মুসলিমের নয়ন মনি হযরত হোসাইন রাঃ আশুরার দিবসে কারবালার প্রান্তে ফুরাত নদীর তীরে ইয়াজিদি বাহিনীর হাতে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা সকলেই এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছে। কিন্তু কারবারের ইতিহাস ও শিক্ষা নিয়ে আমাদের কোন আগ্রহ নেই।
আরো পড়ুনঃ মানুষের চোখ কত মেগাপিক্সেল - মানুষের চোখ কত ডিগ্রি কোণে দেখে
ইতিহাস গ্রন্থ রচনায় লেখক তার পূর্বে রচিত গ্রন্থগুলোর রীতি অনুসরণ করেছেন। ঘটনাগুলোর বর্ণনায় তিনি ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন এবং সেগুলোর বর্ণনায় তিনি বিভিন্ন শিরোনাম দিয়েছেন। প্রথমে তিনি বছরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো এবং পরবর্তীতে ওই বছর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের জীবনী আলোচনা করেছেন।
ইসলামের ইতিহাস চর্চাকারীদের কাছে তাই এ বিখ্যাত গ্রন্থটি মৌলিক ও নির্ভুল ইতিহাস গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এ গ্রন্থটি হিজরি ১৩৪৮ সনে কুর্দিস্তান আল আলামিয়া প্রেসে প্রথম মুদ্রিত হয়। দ্বিতীয়বার মুদ্রিত হয়েছিল কায়রোর আসসা’আদাহ্ প্রেসে ১৩৫১ হিজরিতে। পরে গ্রন্থটি পরিমার্জিতরূপে রিয়াদে ছাপা হয় হিজরি ১৩৮৮ সনে।
১০ মহররম অর্থাৎ আশুরা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তবে ৬১ হিজরির ১০ মহররম কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইন রাঃ এর মর্মান্তিক শাহাদাত বরণ আশুরাকে করেছে আরও গুরুতপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। হজরত মুয়াবিয়া রাঃ বিশ বছর সর্বসম্মতভাবে খলিফা হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনার পর ৬০ হিজরিতে তিনি ইন্তেকাল করেন। কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা সম্পর্কে জেনে নেওয়া একজন মুসলিম হিসেবে কর্তব্য।
মৃত্যুর পূর্বে মজলিশে শুরা ও সামাজিক নেতাদের পরামর্শক্রমে তিনি তার পুত্রকে পরবর্তী শাসক হিসেবে মনোনয়ন দেন। তার মৃত্যুর পর ইয়াজিদ খেলাফতের দাবি করলে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ এলাকার মানুষ তা মেনে নেন। পক্ষান্তরে মদিনার অধিকাংশ মানুষ ইরাকের অনেকে বিশেষ করে কুফার জনগণ তা মানতে অস্বীকার করেন। কুফার জনগণ ইমাম হোসাইনকে খলিফা হিসেবে গ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
কুফার লক্ষাধিক মানুষ ইমাম হোসাইনকে খলিফা হিসেবে বাইয়াত পত্র প্রেরণ করেন। এই পত্রে তারা দাবি করেন যে, সুন্নাহ পুনর্জীবিত এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে অবিলম্বে তার দায়িত্ব গ্রহণ করা প্রয়োজন। মদিনায় অবস্থানরত সাহাবিগণ এবং ইমাম হোসাইনের আপনজনেরা ইমামকে কুফায় যেতে বারণ করেন। ইয়াজিদের পক্ষ থেকে বাধা আসলে ইরাকবাসীরা ইমাম হোসাইনের পক্ষ ত্যাগ করবে।
শহীদে কারবালার ইতিহাস - কারবালার ইতিহাস pdf - কারবালার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
আমরা সকলেই কমবেশি শহীদে কারবালার ইতিহাস সম্পর্কে জানি। কিন্তু এটি আমাদের ইসলামের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তাই কারবালার ইতিহাস pdf অর্থাৎ কারবালার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমাদের আগামী প্রজন্ম ইসলামের শহীদের কারবালার ইতিহাস গুলোকে ভুলে না যায়। কারবালার ইতিহাস pdf এবং কারবালার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস উল্লেখ করা হলো।
হযরত হোসাইন রাঃ তার চাচাতো ভাই মুসলিম ইবনে আকিলকে ইরাকের অবস্থা দেখে আসার জন্য পাঠানো হয়। তাকে তিনি এই নির্দেশ প্রদান করেন যে যদি সে পরিস্থিতি অনুুকূল দেখে এবং ইরাকবাসীদের অন্তরকে সুদৃঢ় ও সুসংহত পায় তাহলে যেন তার কাছে দূত প্রেরণ করে। মুসলিম ইবনে আকিল কুফায় আগমন করার সঙ্গে সঙ্গে ১৮ হাজার কুফাবাসী তার কাছে এসে ইমাম হোসাইনের পক্ষে বাইয়াত গ্রহণ করে।
বাইয়্যাতের কথা কাটিয়ে কাটিয়ে একসময় আব্দুল্লাহ ইবন যুবায়র রাঃ চুপচাপ মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলেন।ইয়াযিদের লোকেরা ইবন যুবায়র রাঃ এর পিছে লেগে থেকেই ব্যস্ত থাকল। ওদিকে কিছুদিন পরে হুসাইন রাঃ ও পরিবার পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পরেন তাঁর ভাই মুহাম্মদ ইবন হানাফিয়া রঃ তাঁকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলেন যে হুসাইন রাঃ যেন নিরাপদে কোন মরু-পর্বত এলাকায় থেকে বাইয়্যাতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন আর কোন শহরে থাকতে হলে যেন কেবল মক্কায়ই থাকেন।
মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রাপথে হুসাইন রাঃ ও আব্দুল্লাহ ইবন যুবায়র রাঃ মিলিত হন। তাঁরা দুইজন আবার মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে যাত্রাকারী ইবন উমর(রা) ও ইবন আব্বাস রাঃ এর সাক্ষাৎ লাভ করেন। উনারা হুসাইন(রা) ও ইবন যুবায়র রাঃ কে বিভেদ সৃষ্টি না করার পরামর্শ দিলেন মদিনায় এসে যখন দেখলেন সবাই বাইয়্যাত দিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার ফজিলত
তখন ইবন উমর রাঃ ও ইবন আব্বাস রাঃ ও পরিস্থিতির বিচারে ইয়াযিদের বাইয়্যাত দেন। ঐদিকে হুসাইন(রা) ও ইবন যুবায়র রাঃ মক্কায় পৌঁছে গভর্নর সাইদ বিন আমরকে বলেন, আমরা কাবার আশ্রয়ে এসেছি। ইয়াযিদের গভর্নরদের কূটকৌশল, চাপ, বাহিনী প্রেরণ মূলত আব্দুল্লাহ ইবন যুবায়র রাঃ এর বিরুদ্ধেই চলতে থাকে-যাকে তারা প্রধান বিদ্রোহী হিসেবে গণ্য করছিল।
ইবনে জিয়াদের বাহিনী কারবালার প্রান্তরে অবরোধ করলে হোসাইন রাঃ বললেন, আমি তো যুদ্ধ করতে আসিনি। তোমরা আমাকে ডেকেছ বলে আমি এসেছি। এখন তোমরা কুফাবাসীরাই তোমাদের বাইয়াত পরিত্যাগ করছ। তাহলে আমাদেরকে যেতে দাও আমরা মদিনার ফিরে যাই অথবা সীমান্তে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি।
সরাসরি ইয়াজিদের কাছে গিয়ে তার সঙ্গে বোঝাপড়া করি। কিন্তু ইবনে জিয়াদ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে তার হাতে আনুগত্যের শপথ নিতে আদেশ দেয়। ইমাম হোসাইন রাঃ ঘৃণা ভরে তার এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করেন। কারবালার ইতিহাস pdf, কারবালার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং শহীদে কারবালার ইতিহাস আলোচনা করা হচ্ছে।
সংগ্রহীতঃ shomoyeralo.com
হাসান হোসেনের কারবালার যুদ্ধ
হাসান হোসেনের কারবালার যুদ্ধ বিষয়টি আমরা সকলেই অবগত রয়েছি। এই কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা আমাদের ব্যাক্তি জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশুরার দিন সকাল থেকে ইবনে জিয়াদের বাহিনী হোসাইন রাঃ এর ওপর আক্রমণ চালাতে থাকে এবং ফোরাত নদী থেকে পানি সংগ্রহের সব পথ বন্ধ করে দেয়। হজরত হোসাইন রাঃ-এর শিবিরে শুরু হয় পানির জন্য হাহাকার। হোসাইন রাঃ সাথীদের নিয়ে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকেন।
এই যুদ্ধে একমাত্র ছেলে হজরত জায়নুল আবেদিন রহঃ ছাড়া পরিবারের শিশু, কিশোর ও মহিলাসহ সব পুরুষ সাথীরা সবাই একে একে শাহাদাতের অমিয়সুধা পান করেন। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ইমাম হোসাইন একাই বীর বিক্রমে লড়াই চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত নির্মম ও নির্দয়ভাবে ইমাম হোসাইনকে শহীদ করা হয়। সিনান বা শিমার নামক এক পাপিষ্ঠ তার মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে।
শাহাদাতের পর ইমাম হোসাইন রাঃ এর ছিন্ন মস্তক বর্শা ফলকে বিদ্ধ করে এবং তার পরিবারের জীবিত সদস্যদেরকে দামেশকে ইয়াজিদের নিকট প্রেরণ করা হয়। ইমামের কর্তিত মস্তক দেখে ইয়াজিদ ভীত ও শঙ্কিত হয়ে পরে এবং বাহ্যিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বলে আমি তো ইমাম হোসাইনকে শুধু কুফায় প্রবেশে বাধা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলাম, তাকে হত্যা করার নির্দেশ দেইনি। তার পরিবার পরিজনকে স্বসম্মানে মদিনায় প্রেরণ করা হয়।
সংগ্রহীতঃ shomoyeralo.com
কারবালার পরের ইতিহাস
কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি কিন্তু কারবালার পরের ইতিহাস সম্পর্কে অনেকেই জানতে চাই না। এখন কারবালার পরের ইতিহাস উল্লেখ করা হলো। বিশ্বনবী সাঃ এর নাতি ইমাম হুসাইন রাঃ ঈয়াযীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েছেন শুনে কুফার দোদুল-মনা লোকেরা তাঁকে ইসলামী বিপ্লবের নেতৃত্ব দেয়ার।
কুফাবাসীর পক্ষ থেকে ১৮ হাজার চিঠি তাঁর কাছে পৌঁছে এবং প্রতিটি চিঠির মধ্যে ১০০ জনের স্বাক্ষর ছিল। কিন্ত প্রয়োজনের সময় কারবালায় খুব কম লোকই তাঁকে সহায়তা দিয়েছে। ফলে ঈয়াযীদের ত্রিশ হাজার সদস্যের সুসজ্জিত বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায় ১৪০ জন সঙ্গী নিয়ে তিনি বীরের মত লড়াই করে শহীদ হন। এই অসম লড়াইয়ে তাঁর পরিবারের অনেক সদস্যসহ ৭২ জন সঙ্গী শহীদ হন ।
তাঁর পরিবারের পুরুষ সদস্যদের মধ্যে কেবল পুত্র আলী ইবনুল হুসাইন বা ইমাম সাজ্জাদ রাঃ অসুস্থতার কারনে বেঁচে যান। ইমাম হুসাইন রাঃ কুফার দিকে যাচ্ছেন গুপ্তচরদের কাছ থেকে পাওয়া এমন খবর সম্ভাব্য গন-বিপ্লব বা গণ-জাগরণ সৃষ্টির ভয়ে ঈয়াযীদ ও তার দলবলকে আতঙ্কিত করে তুলেছিল। ইমাম রাঃ এর সফরের সম্ভাব্য পথ ও তৎপরতা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় ছিল এইসব গুপ্তচর ।
আরো পড়ুনঃ মেষ রাশির নারীর বৈশিষ্ট্য - মেষ রাশির বৈশিষ্ট্য
ঈয়াযীদের নিজের হাতে নিয়োগ করা কুফার গভর্নর উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদকে হূর ইবনে ইয়াজিদ রিয়াহি রাঃ নামের একজন সেনা কর্মকর্তা চিঠি লিখে এই খবর দেন যে রাসূল সাঃ এর নাতি হযরত ইমাম হুসাইন রাঃ ও তাঁর সঙ্গীরা কারবালায় এসেছেন। হূর ইমাম রাঃ কে বাধা দানকারী প্রথম ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও দশই মহররমের প্রাক্কালে তিনি তওবা করে ইমামের রাঃ শিবিরে যোগ দিয়ে বীরের মত যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন।
সংগ্রহীতঃ ফেসবুক
আমাদের শেষ কথাঃ কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা - কারবালার ইতিহাস আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া
প্রিয় পাঠক গন আজকের এই আর্টিকেলে কারবালার ইতিহাস ও শিক্ষা, কারবালার ইতিহাস আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, শহীদে কারবালার ইতিহাস, কারবালার ইতিহাস pdf, কারবালার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, হাসান হোসেনের কারবালার ইতিহাস, কারবালার পরের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন ধন্যবাদ।২০৭৯১
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url