বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ - বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ
বিকাশের মাধ্যমে লেনদেন করার প্রধান উদ্দেশ্য হল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানো বা গ্রহণ করা। কিন্তু বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ তা কি আপনারা জানেন। বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ এবং বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ যদি জানতে চান তাহলে নিচে পড়ুন। আমরা বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ তা নিয়ে আলোচনা করবো।
বিকাশ আমাদের জীবনে টাকা লেনদেন এর বিষয়টা অনেক সহজ করে দিয়েছে। বিকাশের সাহায্যে খুব দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানো যায়। আজ আপনারা এই পোস্ট থেকে বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ বা বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ, বিকাশ ব্যবসা কি হালাল, বিকাশ কি সুদ, বিকাশ এর মালিক কে জানতে পারবেন।
সূচিপত্রঃ বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ
- বিকাশ কি?
- বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ
- বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ
- কিভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন
- বিকাশ লেনদেনের সীমা
- বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ - শেষ কথা
বিকাশ কি?
বিকাশ হল ব্র্যাক-ব্যাংকের দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ফোন দিয়ে অর্থ আদান প্রদান করার একটি সার্ভিস। এই বিষয়ে বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে বলা আছে বিকাশ হল ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ এবং মানি ইন মোশন ইউএসএ একসাথে এটা শুরু করে।
পরে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন ও বিকাশে যোগদান করে। ব্র্যাক নামের এই এনজিওটি ১৯৭২ সালে ফজলে হাসান আবেদ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করেন। ব্র্যাক হল একটি বেসরকারি সংস্থা যা সরকারের নজিও ব্যুরোর অধীনে গঠিত। এখান থেকে আমরা জানতে পারি বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ বা বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ, বিকাশ ব্যবসা কি হালাল, বিকাশ কি সুদ এবং বিকাশ এর মালিক কে তা জানতে পারি।
বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ
বিকাশে চাকরি করা জায়েজ নয়। বিকাশের মত সুদি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করা আমাদের উচিত নয়। কারণ আল্লাহ কেনা বেচাকে হালাল বলেছেন কিন্তু সুদকে হারাম বলেছেন। এ কথা আমরা সবাই জানি যে ব্র্যাক ব্যাংক হল একটি সুদি ব্যাংক। তাই তার আন্ডারে পরিচালিত বিকাশে ও সুদ রয়েছে। আপনি বিকাশে টাকা রেখে বছরে 4% সুদ পাবেন। কিন্তু আমরা সবাই জানি সুদ ইসলামে কতটা হারাম।
আরো পড়ুনঃ মেষ রাশির নারীর বৈশিষ্ট্য - মেষ রাশির বৈশিষ্ট্য
আমরা এটাও জানি ইসলামের দৃষ্টিতে সুদ হল হারাম, ধ্বংস মূলক পাপ এবং "মহানবী বলেছেনঃ যারা সুদ নিবে বা দিবে তারা যেন আমার এবং আমার আল্লাহ্র সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করলো" তাই সুদ নেওয়া থেকে দূরে থাকুন। এবং বিকাশে চাকরি করা থেকে বিরত থাকুন। আমরা বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ বা বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ, বিকাশ ব্যবসা কি হালাল, বিকাশ কি সুদ এবং বিকাশ এর মালিক কে তা নিয়ে আলোচনা করবো।
বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ
আমরা জানি বিকাশ এ টাকা মোবাইলের মাধ্যমে লেন দেন করা হয় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে। অন্য কথায় তাকে সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট ও বলা হয়। বিকাশে টাকা পাঠাতে হলে আমাদের প্রথমে একটা একাউন্ট খুলে নিতে হবে আবার আপনার নিজের একাউন্ট না থাকলেও হবে।
একজন মোবাইল দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে অন্য জনের কাছে টাকা পাঠাতে পারে যেটাকে সেন্ড মানি ও বলতে পারেন। এতে ইসলামে সেভাবে কোনো পাপ নাই। আপনার কাছে যদি কোনো অন্য উপায় না থাকে টাকা পাঠানোর জন্যে তাহলে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ মানুষের চোখ কত মেগাপিক্সেল - মানুষের চোখ কত ডিগ্রি কোণে দেখে
আপনারা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর সময় যে একাউন্ট থেকে পাঠান সে তার পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু টাকা নেয় যেটা কিনা ইসলামে জায়েজ আছে। যেমন আপনি কারো কাছে ১০০ টাকা পাঠাবেন সেখান থেকে ১০ টাকা কেটে নেয়। এভাবে আপনি বিকাশের সাহায্যে টাকা পাঠাতে পারেন। এখান থেকে আমরা জানতে পারি বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ বা বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ, বিকাশ ব্যবসা কি হালাল, বিকাশ কি সুদ এবং বিকাশ এর মালিক কে তা জানতে পারি।
কিভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন
বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করা খুবই সহজ। ২০১১-২০১৮ এর মধ্যে বিকাশে নিবন্ধন করার জন্য গ্রাহকদের নিকটতম বিকাশ কেন্দ্রে যেতে হত। কিন্তু এখন এটি খুব সহজ এবং আপনাকে কোথাও যেতে হবে না। আপনি শুধুমাত্র বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করে আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থেকে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরির সিস্টেম এবং প্রক্রিয়াঃ
আপনি তিনটি পদ্ধতিতে বিকাশ অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
- বিকাশ সেন্টার থেকে
- নিকটতম বিকাশ এজেন্টের দোকান
- বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে
এই তিনটি পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল।
বিকাশ সেন্টার থেকেঃ
যদি আপনার বাড়িটি যেকোন বিকাশ সেন্টারের কাছে থাকে তাহলে সেই জায়গায় গিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি করা আপনার পক্ষে খুব সহজ। আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং আপনার ছবি আপনার সাথে নিতে হবে। আপনার মোবাইল ফোন সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।
বিকাশ এজেন্ট দোকান থেকেঃ
প্রতিটি উপজেলা ও স্থানীয় এলাকায় হাজার হাজার বিকাশ এজেন্টের দোকান রয়েছে। আপনি তাদের থেকে আপনার অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করতে পারেন এবং আপনার অ্যাকাউন্ট নিবন্ধিত করার জন্য আপনাকে বিকাশ এজেন্টকে যে কোনও অর্থ প্রদান করতে হবে।
বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করেঃ
বিকাশ অ্যাপটি খুবই স্মার্ট অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করে যে কেউ তাদের বাড়িতে বসে তাদের অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালু করতে পারে। আর এটা হল খুব সহজ পদ্ধতি বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্যে।
বিকাশ লেনদেনের সীমা
বিকাশ সার্ভিস বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত। এটি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও তত্ত্বাবধান করা হয়। আপনি নিজের পছন্দে বিকাশ সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন না। এটি লেনদেন সম্পর্কে কিছু শর্তাবলী আছে।
নির্দিষ্ট অর্থ লেনদেন আইন বজায় রাখার মাধ্যমে ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট, ট্রান্সফার, সেন্ড মানি এবং পেমেন্ট করা হয়। মানি লন্ড্রি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিকাশ সার্ভিসে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর প্রতিটি বিকাশ গ্রাহককে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন মানতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ার ফজিলত
এখন আমরা জানবো যে আপনি কত টাকা ক্যাশ ইন করতে পারবেন, অন্য অ্যাকাউন্টে কত টাকা পাঠাতে পারবেন, এজেন্ট এবং এটিএম থেকে কত ক্যাশ আউট করতে পারবেন যেকোনো কেনাকাটার জন্য সম্পূর্ণ অর্থপ্রদান এবং আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে আপনি কত টাকা রাখতে পারবেন।
বিকাশ নগদ সীমাঃ
অনেকে মনে করেন যে তারা তাদের ইচ্ছামত ক্যাশ ইন করতে পারে। কিন্তু তারা সম্পূর্ণ ভুল। আপনি আপনার বিকাশ থেকে সীমিত পরিমাণ অর্থ নগদ করতে পারেন। আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে নগদ ইন করার দৈনিক এবং মাসিক সীমা রয়েছে। আপনি এক মাসে সর্বোত্তমভাবে 1,50,000 টাকা নগদ উঠাতে পারেন।
বিকাশ এ টাকা পাঠানোর সীমাঃ
কখনও কখনও আমাদের অন্য বিকাশ অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স স্থানান্তর করতে হয়। ক্যাশ ইনের মতো এটারও একটা সীমা আছে। সম্ভবত আপনি জানেন যে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে আপনাকে চার্জ দিতে হবে। বিকাশ মোবাইল মেনু থেকে, আপনি একবারে ১০০০০ টাকা পাঠাতে পারেন। এবং আপনি মাসে ১০ বারের বেশি টাকা পাঠাতে পারবেন না।
বিকাশ ক্যাশ আউট সীমাঃ
ক্যাশ ইন এবং সেন্ড মানি-এর মতো ক্যাশ আউটেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিকাশ গ্রাহকের জন্য সীমিত সংখ্যক ক্যাশ আউট সুযোগ রয়েছে। আপনি একবারে ১০০০০ টাকা ক্যাশ আউট করতে পারেন। এবং এটি মাসে ১০ বার তুলতে পারবেন।
বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ - শেষ কথা
বিকাশ বাংলাদেশের একটি মোবাইল মানি সিস্টেম যা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু বিকাশে সুদের পদ্ধতি রয়েছে তাই বিকাশে চাকরি করা জায়েজ নয়। কিন্তু বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা ইসলামে হারাম নয়। আপনারা বিকাশ দিয়ে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। আমাদের আজকের এই পোস্ট পড়ে আপনারা বিকাশে চাকরি করা কি জায়েজ বা বিকাশে লেনদেন কি জায়েজ, বিকাশ ব্যবসা কি হালাল, বিকাশ কি সুদ, বিকাশ এর মালিক কে তার বিস্তারিত জানতে পারবেন। [জব আইডি=২২৪৯৮]
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url