পিরিয়ডের ব্যথা সমস্যার সমাধান - পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়
নারীর মাসিক ঋতু স্রাবের সময় হওয়া যন্ত্রণা যা তার দৈনিক কাজকর্মের বাধা জন্মায়।কিন্তু সাধারণত ঋতুস্রাবের যন্ত্রণাকে ডিসমেনোরিয়া বলা হয়।বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের চলা সমীক্ষা অনুযায়ী ৫০% এরও অধিক মহিলার এমন যন্ত্রণা হয়।ডাক্তারী ভাষায় এই অবস্থাকে ডিসমেনোরিয়া বলে।গ্রীক শব্দ "ডিস"মানে হল কষ্টকর, "মেন" হল মাসিক ও "রিয়া"মানে হল প্রবাহ। স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে মহিলাদের মধ্যে পাওয়া অসুবিধাসমূহের ভিতর এটি হল প্রধান একটি রোগ।ডিসমেনোরিয়া ঋতুস্রাবের কয়েকদিন আগে থেকে হতে পারে বা সাথে হতে পারে এবং সাধারণত ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার সাথে সাথে যন্ত্রণাও কমে যায়।কখনও ডিসমেনোরিয়ার সাথে অতিমাত্রায় রক্তস্রাব হয়-এমন অবস্থাকে Menorragia বলে।কোন অন্য রোগ বা জরায়ুর গঠনের ত্রুটির জন্য হওয়া ডিসমেনোরিয়াকে সেকেন্ডারী ডিসমেনোরিয়া বলা হয়।
সূচিপত্রঃপিরিয়ডের ব্যথা সমস্যার সমাধান-পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়
- ভূমিকা
- প্রকারভেদ
- পিরিয়ডের সময় ব্যথার লক্ষণ
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় ও দোয়া
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় ও চিকিৎসা
প্রকারভেদঃ
ডিসমেনোরিয়া দুই প্রকারের হতে পারে।মহিলার স্বাভাবিক জননতন্ত্রে কোনো নির্দিষ্ট কারণ ধরা না পড়লে তা হতে পারে প্রাইমারী ডিসমেনোরিয়া।জননতন্ত্রের বিজুতির ফলে যন্ত্রণা হলে সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া-যার কারণ হতে পারে যেমন এন্ডোমেট্রিয়োসিস,লিয়োমায়মা,এডিনোমাইকোসিস,ইউটেরাইন ফাইব্রয়ে্ড,ওভারিয়ান সিস্ট ইত্যাদি।এন্ডোমেট্রিয়োসিস রোগ সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়ার একটি মুখ্য কারণ।এই রোগের জরায়ুর কোষ (এন্ডোমেট্রিয়াল কোষকলা) শরীরের অন্যান্য স্থানে পাওয়া যায়।যার ফলে রোগীর মাসিকের যন্ত্রণ,অনিয়মিত বা বর্দ্ধিত ঋতুস্রাব,সন্তানহীনতা ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়। ২৫র থেকে ৩৫ বছর বয়স এই রোগ হতে দেখা যায়।পেলভিক পরীক্ষা,ভেজাইনাল আলট্রাসনোগ্রাফি ও পেলভিক লেপ্রোস্কপির সহযোগে রোগ শনাক্ত করা যায়।
পিরিয়ডের সময় ব্যথার লক্ষণগুলো-
পিরিয়ড হওয়ার সময় ভুক্তভোগী সকল মহিলা কম-বেশি পরিমাণে তলপেটের যন্ত্রণা অনুভব করে।যন্ত্রণা একই জায়গায় থাকতে পারে নতুবা একধারে থেকে অন্যধারে হতে পারে।যন্ত্রণাটি তলপেট থেকে পিঠের দিকেও যেতে পারে।পিরিয়ড আরম্ভ হওয়ার দুই একদিন আগে থেকেই যন্ত্রণা হতে পারে ও পিরিয়ড চলাকালীন দিনগুলিতে যন্ত্রণা অব্যাহত থাকে।সমীক্ষায় এক তথ্য অনুযায়ী প্রতি সাতজন মহিলার ভিতর একজনের পেটের যন্ত্রণা তীব হয়। আনুষঙ্গিক কিছু লক্ষণ দেখতে পাওয়া যায়।সেগুলি হল-বমি বমি ভাব,মাথার যন্ত্রণা,মাথা ঘোরা, পেটের অসুখ বা পৌচ কষা হওয়া,মানসিক অস্থিরতা,স্তনযুগলে যন্ত্রণা অনুভব হওয়া ইত্যাদি।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়-পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর দোয়া
পিরিয়ড নারীদের জন্য নেয়ামত।প্রত্যেক মাসে সাধারণত ৩ দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত পিরিয়ড থাকতে পারে।এই দিন গুলোতে হাত-পা,কোমর,তল পেট প্রচুর ব্যথা থাকে।পিরিয়ডের ব্যথার সময় ব্যথা নিরাময়ের ঔষুধ খাওয়া একদমই উচিত নয়।ইসলামে কিছু দোয়া রয়েছে যা আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) শিখিয়েছেন সে গুলো পাঠের মাধ্যেমে এই ব্যথা নিরাময় হয়।ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম এই ধর্মে সব বিষয়ের সমাধান আছে।
দোয়া-১
উচ্চারণ;আউজু বি-ইজ্জাতিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহাজিরু।
অর্থঃআল্লাহর নামে আমি আল্লাহর অসীম সন্মান ও তার বিশাল ক্ষমতার অসিলায় আমার অনুভূত এই ব্যথার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।
দোয়া-২
উচ্চারণঃ আল-আজিমু
এই দোয়াটি আমল করার নিয়মঃএক গ্লাস পানিতে ১ বার দরূদে ইব্রাহীম এবং আল্লাহর গুনবাচক নামটি ৭ বার পাঠ করে ফু দিয়ে খেলে পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
দোয়া-৩
উচ্চারণঃ ইয়া মুতাআল বা ইয়া মুতায়ালী
এই দোয়াটি আমল করার নিয়ম-পিরিয়ড চলাকালে আল্লাহর গুনবাচক নামটি ১২১ বার পাঠ করে পানিতে ফুঁ দিয়ে খেতে হবে।পিরিয়ড চলাকালীন দিন গুলোতে প্রতিদিন একবার খেলে ব্যথা কমে যাবে।ব্যথার স্থানে হাত রেখে এই দোয়া ৭ বার পাঠ করলে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃইদ্দত অর্থ কি-ইদ্দত কেন পালন করা হয়যদিও এই সময় শরীর নাপাক থাকে বলে অনেকেই মনে করেন দোয়া করা যায় না,এই ধারণা টি ভুল।মেয়েদের জন্য দোয়া করা উত্তম সময়।হায়েজ অবস্থায় নারীদের কষ্ট হলেও মুখে যত বেশি দোয়া দুরূদ যিকির ইস্তেগফার পাঠ করা যায় ততই সওয়াব পাওয়া যায়।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়-
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।গরম পানির সেঁক পেটের ব্যথা কমাতে কার্যকরী।
- গরম চা খেতে পারেন আদা কুচি কুচি করে খেতে পারেন বা চায়ের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
- পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিতে হবে,মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে।প্রচুর পরিমাণে পানি বিভিন্ন ধরনের ফলের রস ও শরবত খেতে হবে।ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট-পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ঔষধের নাম-
ষ্টেরইড না থাকা প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন বিরোধী NonAnt Inflammatory বেশিরভাগ রোগীর কষ্টের উপশম ঘটায়।নেপ্রস্কেন,আইব্রপ্রফেন,মেফেনোমিক,এসিক্লোফেনা ইত্যাদি এই শ্রেণীতে পডে।এমন ঔষধসমূহ প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বাধা দেওয়ার ফলে রোগীর যন্ত্রণার উপশম ঘটে।
চিকিৎসককে না জানিয়ে নিজে ঔষধ আরম্ভ করতে নেই।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url