OrdinaryITPostAd

মেছতা দুর করার ক্রিমের নাম--মুখে মেছতা কেন হয়।

 মেছতা-মেছতা চিনেন না বা আশেপাশের পরিচিত কেউ এই সমস্যায় ভুগছে না এমন মানুষ পাওয়া ভার।মেছতা হলো ছোট ছোট বাদামি রঙের ছোপ ছোপ দাগ যা বেশিরভাগ সময় মুখের ত্বক হাতের বাহুতে ঘাড়ে বা পিঠে দেখা যায়।আসলে শরীরের যে অংশগুলো সুর্য্যের আলোর সংস্পর্শে থাকে সেসব জায়গায় মেছতা দেখা যায়।


সূচিপত্রঃ

  • ভূমিকা
  • মেছতা কেন হয়
  • মেছতা দূর করার উপায়
  • ঘরোয়া পদ্ধতিতে মেছতা দূর করার উপায়
  • চিকিৎসা 

মেছতার কারণে মুখের সৌন্দর্য কমে যায় অনেকটাই।এটি এমনই এক নাছোড়বান্দা সমস্যা যে সহজে দূর হতে চায় না।অনেক সময় বয়স বৃদ্ধির কারণে এই সমস্যা হতে পারে।মেছতা দূর করতে অনেকে লেজার ট্রিটমেন্ট করায়।লেজার শুধু করালেই হয় না,এরপর প্রয়োজন পড়ে বাড়তি যত্নের।এদিকে বেশিরভাগই লেজার ট্রিটমেন্টের পরে সঠিকভাবে যত্ন নেন না।যে কারণে ত্বক আরো বেশি খারাপ হয়ে যায়।তাই মেছতা দূর করার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হিসেবে বেছে নিতে পারেন ঘরোয়া উপায়।

মেছতা কেন হয়-

  • নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ বা ইনফার্টিলিটির চিকিৎসার জন্য ঔষধ খেলে মেছতার ঝুঁকি বাড়ে।
  • শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রায় হেরফের হলে মুখে মেছতার সমস্যা দেখা দিতে পারে রজোনিবৃত্তির পর কিংবা গর্ভাবস্থাতেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
  • যারা দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে রোদে কাজ করেন সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার না করে,তারাও এই সমস্যায় পড়েন।মুখে মেছতা পড়ার অন্যতম কারণ হলো অতিবেগুনি রশ্মি।সুর্যের আলোর মধ্যে থাকা ইউভি এ এবং ইউভি-বি ত্বকে মেলানিন উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে।যার ফলে মুখে মেছতার দাগ পড়তে পারে।
  • মুখের কালো দাগছোপ তুলতে বহু নারীরাই ব্যবহার করেন স্টেরয়েডজাত ক্রিম।কিন্তু দীর্ঘদিন এ সব ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি আটকানো মুশকিল।
  • সুর্য্যের আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি শরীরে মেলানিন বাড়িয়ে দেয়।তাই বেশিক্ষণ রোদে থাকলে শরীরের কিছু কিছু অংশের ত্বকে মেলানিন বেড়ে যায় যার ফলে সেসব জায়গায় রঙ গাঢ় হয়ে যায়।যা দেখতে বাদামি ছোপ দাগের মতো মনে হয়।যাদের গায়ের রঙ ফর্সা,চুল একটু লালচে তাদের জেনেটিক্যালি মেছতা হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
  • হরমোনের সমস্যা যেমন থাইরয়েড বা ডিম্বাশয়ের সমস্যায় এটা হতে পারে।মেনোপজের পর এটি বেশি হতে দেখা যায়,তার পেছনেও হরমোনের কারণই দায়ী।
  • অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের কারণে মেছতা হতে পারে,ডাক্তারি ভাষায় একে বলে মেলাজমা কসমেটিকা যকৃতের জটিলতার কারণে যে মেছতা হয়,তাকে বলা হয় মেলাজমা হেপাটিকা।

মেছতা দূর করার উপায়ঃ

  • চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে ডিমেলামাইজিং ক্রিম।এ ছাড়া লেজার ট্রিট্মেন্ট করেও এই দাগ তোলা যেতে পারে।এই ট্রিট্মেন্ট বেশ খরচসাপেক্ষ।
  • হাইড্রোকুইনোন এটি একটি রাসায়নিক পদার্থ যা মেছতার দাগ দূর করতে সাহায্য করে।ডাক্তারা মেছতা দূর করতে হাইড্রোকুইনোন জেল,লোশন,বা ক্রিম ব্যবহার করার পরামর্শ দেন।
  • কেমিক্যাল পিলিং,মাইক্রোডার্মাব্রেশন,ও পিআরপি থেরাপি,এই পদ্ধতিগুলোও মেছতা দূর করতে ব্যবহার করা হয়।
  • মলম ও ট্যাবলেট কিছু আধুনিক মলম ও ট্যাবলেট মেছতা দূর করতে সাহায্য করে।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে মেছতা দূর করার উপায়ঃ

অ্যাপেল সাইডের ভিনেগারঃ

  • ১ টেবিল চামুচ অ্যাপেল সাইডের ভিনেগার ও ১ চা চামুচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।এবার মেছতার জায়গায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।যদি আপনি শুধুমাত্র মেছতায় লাগান তাহলে এই প্যাকটি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন।আর যদি পুরো মুখে লাগান তাহলে একদিন পর পর ব্যবহার করবেন। অ্যাপেল সাইডের ভিনেগার থাকে ম্যালিক এসিড যা ডার্ক সেলকে এক্সফোলিয়েট করে ভিতর থেকে ফর্সা করে।

অ্যালোভেরাঃ

  • ফ্রেশ অ্যালোভেরা নিয়ে মেছতার জায়গায় লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন।এরপর ধুয়ে নিন অ্যালোভেরা জেল আপনি চাইলে সারারাত ও রেখে দিতে পারেন। -অ্যালোভেরা জেল ডার্ক সেলের ডিপিগমেন্টেশন করে আর মেছতার দাগ কমায়।

কলার খোসাঃ

  • কলার খোসার ভিতরের দিকটি নিয়ে মেছতার জায়গায় ৩ থেকে ৪ মিনিট ঘষুন।এরপর আরো ৫ মিনিট রেখে দিন যাতে কলার খোসার অংশগুলো ত্বক শুষে নেয়।প্রতিদিন একবার করে এই ট্রিপসটি ব্যবহার করতে পারেন।--ত্বক ফর্সা করতে ও বয়সের ছাপ দূর করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলে গলুকোনোল্যাক্টোন যা কলার খোসাতে পাওয়া যায়।

মেছতা দূর করতে তেল

আমন্ড অয়েলঃ

  • অল্প আমন্ড অয়েল গরম করে নিন।এবার ২ থেকে ৩ ফোঁটা অয়েল আঙ্গুলে লাগিয়ে নিয়ে মেছতার জায়গায় কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন।ঘন্টা খানেক রেখে ধুয়ে নিন।--আমন্ড প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে ও মেছতার দাগ হালকা করে।তাছাড়া এতে ভিটামিন এ এবং ই থাকে যা ত্বককে ভেতর থেকে নারিশ করে।

অলিভ অয়েলঃ

  • প্রথমে তেল গরম করে আঙ্গুলের টিপ এ অল্প তেল নিয়ে সারামুখে ম্যাসাজ করুন।যতক্ষন না ত্বক তেল শুষে নেয় ততক্ষণ ম্যাসাজ করুন।এবার ঘন্টাখানেক রেখে হালকা উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।আপনি চাইলে দিনে ২ থেকে ৩ বার আপনার মেছতার উপর অলিভ অয়েল লাগাতে পারেন।

টি ট্রি অয়েলঃ

  • ত্বকের যত্নে টি ট্রি অয়েল খুব জনপ্রিয়।মেছতার দাগ কমাতেও আপনি এই টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন.১-২ ফোঁটা অয়েল নিয়ে মুখে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে নিন।কয়েক ঘন্টা রেখে দিতে পারেন।আপনি চাইলে দিনে ১-২ বার এই এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।--টি ট্রি অয়েল হিলিং প্রোপার্টজের কারণে এটি মেছতার দাগ কমায় সাথে ব্রণের সমস্যা দূর করে সুদিং অনুভতি দেয়।যাদের ত্বক সেন্সিটিভ তারা টি ট্রি অয়েলের সাথে ২-৩ ফোঁটা অন্য কোন তেল যেমন অলিভ অয়েল বা জোজোবা অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।

বিভিন্ন রকমের ফলের রস

লেবুর রসঃ

  • লেবুর রসের সাথে অল্প পরিমাণ মধু মিশিয়ে তা পাতলা করে নিন।এবার মেছতার দাগে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।এরপর ধুয়ে নিন।প্রতিদিন এটি ব্যবহার করতে পারেন।যাদের ত্বক সেন্সিটিভ তারা একদিন পর পর ব্যবহার করলে ভালো।লেবুর রস ব্লিচিং হিসেবে কাজ করে ও ত্বকের নানারকম দাগ দূর করে।

টমেটোর রসঃ

  • একটি ছোট টমেটো নিয়ে ভালোভাবে ম্যাশ করে নিন।এবার ম্যাশড করা টমেটো মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।এই প্যাকটিও আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন।--প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় এটি ত্বকের টাইরোসিনেজের এক্টিভিটি কমায় ও ত্বককে ফর্সা করে।

পেঁয়াজের রসঃ

  • একটি ছোট পেঁয়াজ গ্রেট করে নিন।এবার চিপে পেঁয়াজের রস বের করে নিন।সেই রসের সাথে ১ চা চামুচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মেশান।এই জুসটি মেছতার উপর লাগিয়ে নিয়ে ৩-৪ মিনিট অপেক্ষা করুন।এরপর ধুয়ে ফেলুন।ভালো রেজাল্টের জন্য প্রতিদিন ব্যবহার করুন।--এই সহজ পদ্ধতিটি মেছতা বা ব্রণের যেকোন দাগ দূর করতে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে।

টকদইঃ

  • ১ টেবিল চামুচ টক দই ও ১ চা চামুচ মধু মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিন।এবার পরিস্কার মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ১০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।এই মাস্কটি প্রতিদিন একবার করে ব্যবহার করতে পারেন।মেছতার দাগ দূর করে ফর্সা ত্বক করার জন্য একদম পারফেক্ট কম্বিনেশন হলো টকদই ও মধু।

চিকিৎসা ঃ

বর্তমানে কেমিক্যাল পিলিং মাইক্রোডার্মাব্রেশন ও পিআরপি থেরাপির মাধ্যমে মেছতার চিকিৎসা করা হচ্ছে।কিছু আধুনিক মলম ও মুখে খাওয়া ট্যাবলেট ও মেছতা চিকিৎসা কার্যকর।মেছতা সাধারণত দুই ধরনের-এপিডারমাল মেলাজমা ও ডারমাল মেলাজমা।ত্বকের ওপরের অংশ যে মেছতা হয়,তাকে বলে এপিডারমাল মেলাজমা।আর ডারমাল মেলাজমা হয় ত্বকের ভেতরের অংশ।এপিডারমাল মেলাজমার চিকিৎসা সহজ,তবে ডারমাল মেলাজমার চিকিৎসা একটু জটিল।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪